Saturday, 31 January 2015





বাণী-বন্দনা

বসন্ত পঞ্চমী তিথি, পূণ্য মাঘ মাসে,
বাসক ফুলের গন্ধ ভাসিছে বাতাসে
বাণী-বন্দনায় আজি, দিকে দিকে সাড়া,
মণ্ডপ সজ্জায় ব্যস্ত, কত কাজে তাড়া।

মণ্ডপসজ্জা আর প্রতিমা আনয়ন,  
হৃষ্টচিত্তে মাতে সবে যত শিশুগণ।
কারো হাতে বইখাতা, শরের কলম,
কেউ বা আনে ফুল, দর্বাদল নরম।

দেবীর বন্দনা গান গাহিছে ভুবন,
বৃক্ষ শাখে বসি পাখি, করিছে কুজন
শুক্লাম্বরা বাক্ দেবী, রূপে অনুপমা
নারদ আদি ব্যাসদেব দিতে নারে সীমা।

বিদ্যার অধিষ্ঠাত্রী দেবী, বিদ্যাদায়িনী,
এসো মাগো এ ধরায়, দেবী বীণাপানি



সরস্বতী বন্দনা
মাঘ মাস, শুক্ল পক্ষে, বসন্ত পঞ্চমী ,
বিদ্যাদেবী বীণাপানি, তোমারে প্রণমি
হংসযুক্ত রথ পরে, চড়িয়া বিমানে,
আবির্ভূতা হন দেবী, এই ধরাধামে

আমার কণ্ঠেতে মাগো দেহ তব সুর,
যে সুরে জিনেছ মাগো, ঊর্দ্ধ সুরপুর
আমার মস্তকে দেহ চরণ কমল,
লিখিতে পারি মা যেন কবিতা সকল

কবি আমি, গেয়ে যাই দেবীর বন্দনা,
শ্বেত বীণা ধরা দেবী, শ্বেত আভরণা
অপার মহিমা তব বিদিত ভুবন,
বাল্মিকী রচিয়াছেন কাব্য রামায়ণ

বিশ্ব চরাচর সবে করিছে আহ্বান

তুমি বিদ্যাদায়িনী মা, বিদ্যা কর দান

Friday, 30 January 2015

সাধারণতন্ত্র দিবসে

সাধারণতন্ত্র দিবসে
সারা দেশ দিচ্ছে ডাক,
দুর্নীতি আর ভ্রষ্টাচার
দেশ হতে মুছে যাক

সাধারণতন্ত্র দিবসে
দেশ জাতির শপথ,
বিশ্বজুড়ে চালাব মোরা
অগ্রগতির রথ

এসো সবাই করবো মোরা
দেশ গঠনের কাজ,
সাম্যের গান গাইব মোরা
গড়বো নতুন সমাজ

সশস্ত্র প্রহরী, ভারতীয় সেনা,
নিষেধ জানে না মানা,
বিদেশী শত্রুরা এদেশে আজও
পারবে না দিতে হানা

ভারতসূর্য চির উদ্ভাসিত,
হয়নিকো আজও মলিন ;
চেয়ে দেখ , আসিছে সুদিন
আসিবে এবার শুভদিন































 আমার গাঁয়ে

গাঁয়ের ছায়া,
মাটির মায়া,
গাঁয়ের ছোট ঘর

গাঁয়ের ছেলে,
বিলের জলে,
ছুঁড়ে মারে পাথর

গাঁয়ের রাখাল,
নিয়ে গরুপাল,
বাজায় বাঁশের বাঁশি

গাঁয়ের খেতে,
দিনে ও রাতে,
লাঙল চালায় চাষী

গাছের শাখে,
কোকিল ডাকে,
আম-কাঁঠালের বনে

নয়ন দিঘিতে,
শালুক ফোটে,
পুলক জাগায় মনে

দিনের শেষে,
সূয্যি ডোবে,
আঁধার নামে গাঁয়ে

চাঁদ ওঠে,
তারা ফোটে,
নীল আকাশের গায়ে























গোলাপের কান্না

শীতের ধোঁয়াশাময় রাতে,
গোলাপ একাকী শুধু কাঁদে

ফুল হয়ে জন্মেছিল গোলাপ
চারপাশে তার কাঁটার ঝাড়
তারে শুধু একদৃষ্টে
চেয়ে চেয়ে দেখে
ফুল হয়ে জন্মে সে রূপ,
রস, বর্ণ ও গন্ধময়
পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিল
তার সৌন্দর্য আর সুগন্ধ
সব কিছু থেকেও
তার অধিকার কেন নেই
দেবতার চরণ ছোঁয়ার....?

শীতের কুয়াশা ঝরা রাতে,
গোলাপ একাকী শুধু কাঁদে

বিষাক্ত কীটের দংশনে গোলাপের
পাপড়ি আজ ক্ষত-বিক্ষত
ঝরে না পড়লেও আগের
সেই জৌলুষ
আজ আর নেই
প্রদোষকালের ঝঞ্ঝা বাতাসে
গোলাপ ঝরে যায়
রেখে যায় সদ্য অতীতের
এক বেদনাময় স্মৃতি

শীতের অশ্রু ঝরা রাতে,

গোলাপ একাকী শুধু কাঁদে

Sunday, 4 January 2015


কাব্যের কড়া হাতুড়ি

আর্তনাদের নদী বয়ে চলে শীতের শিশির ভেজা রাতে
মৌনমুখর রাত্রি কাঁদে নীরব নির্জন শ্মশানঘাটে
হাহাকারের পাহাড় জমেছে হাটে মাঠে পথে ঘাটে,
বুভুক্ষা মানুষের মৌন মিছিল প্রকাশ্য রাজপথে
এই কামনার সাগরে ভাসে ভালবাসার মৃতদেহ,
নীরব নিঝুম স্তব্ধ দুপুরে ক্রন্দন করে কেহ,
ঘোমটা জড়ানো কৃষকবধূর প্রেম, প্রীতি আর স্নেহ,
হোগলা পাতার জীর্ণ কুটীরে বালকের খেলাগেহ
মৃত্যুকবলিত গাঁয়ে থেমে গেছে মৃত্যুর কোলাহল,
অর্থপিপাসু ধনীদের দল হাসিতেছে খলখল,
অত্যাচারের চাবুক চালায় অত্যাচারীর দল,
চাবুকের ঘায়ে রক্ত ঝরে, চোখ ফেটে আসে জল 
মানুষ হয়েছে অমানুষ আজ, মারে মানুষের বুকে ছুরি,
ব্যথা বেদনার সূতোয় গাঁথা হাসি কান্নার লুকোচুরি,
কামনায় রাঙা গোলাপ গাছে ফোটে না ভালবাসার কুঁড়ি,
বিদ্রোহ আজ কবিতার পাতায়, কাব্যের কড়া হাতুড়ি








দেবী দুর্গার আবাহন

আশ্বিনের শারদ প্রাতে-
দিকে দিকে বেজে উঠেছে শংখধ্বনি
নির্মল মেঘমুক্ত শরতের শুভ্র নীলাকাশ,
বাতাসে ছড়ানো শিউলি ফুলের সুবাস
নদীর ধারে সাদা কাশফুলের বনে,
মৃদুমন্দ সমীরণ সানন্দে ঘোষণা করে-
আনন্দময়ী দেবী মহামায়ার
আগমনবার্তা দেবী আসছেন -
কৈলাস থেকে মর্ত্তধামে
ত্রিনয়নী দেবী দুর্গা,
দশভূজা দশপ্রহরণধারিণী
মহিষাসুরমর্দিনী মা আদ্যাশক্তি মহামায়া
তাই বঙ্গবাসী আজ
সাজিয়েছে শারদ অর্ঘ্য
ঢাকীরা ঢাক বাজায়
মন্দিরে মন্দিরে বাজে কাঁসরঘণ্টা
জ্বলে ওঠে ধূপদীপ
সাজায় মঙ্গল ঘট
দুর্বা, ধান আর তুলসীপাতা
ঘটে দিয়েছে আম্রপল্লব
বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে
হয় তার আবাহন
আনন্দে মেতে উঠে
সারা বিশ্বভুবন
পূজো এসে গেল
এল খুশির দিনে মনকে
রাঙিয়ে তোলার দিন
এবার পূজোয় মেতে উঠবে
সারা বিশ্ববাসী
বাঙালীর জাতীয় জীবনে
এই দুর্গাপূজা সার্বজনীন
সুন্দর, শিব আর শক্তির আরাধনায়
মেতে উঠুক সারা মর্ত্তলোক-
বিশ্ব চরাচর আনন্দে গেয়ে উঠুক-
যা দেবী সর্বভূতেষু শক্তিরূপেন সংস্থিতা
নমস্তেসৈ নমস্তসৈ নমস্তসৈ নমো নমঃ

ওঁ শান্তি! ওঁ শান্তি! ওঁ শান্তি!