Thursday, 30 July 2015

বর্ষার কবিতা-13

গগনে গগনে, আজি বরিষণে,
মেঘেরা ছাড়িছে হুংকার,
কাঁপিছে ভূধর, হাসিছে বিজুলি,
চৌদিকে কালো অন্ধকার

বাড়িতেছে জল, ফুঁসিছে তটিনী,
কানায় কানায় বান,
প্লাবনের জলে, নৌকা ডুবিলে,
কেমনে বাঁচিবে প্রাণ?

ঐ ডাকে শোন, মেঘের গর্জন,
বৃষ্টি ঝরিছে অঝোরে
আজি দুর্যোগে, কালিমাখা মেঘে,
বৃষ্টি নামিল সজোরে

জলাময় মাঠে, কাদা পথে ঘাটে,
গরু বাঁধা গোয়াল ঘরে,
রান্নাঘরের চালে, কভুবা পাঁচিলে,
ভেজা কাক খেলা করে

ঐ যে দূরে, নদীর ধারে,
যাত্রী নাহিক খেয়া ঘাটে,
বাঁধের ধারে, পুকুর পাড়ে,
হাঁসেরা সাঁতার কাটে

সূয্যি কখন, ডুবে গেছে হায়,
ঝিঙেফুল ফুটে গাছে
ঘাটের মাঝি, চলে গেছে আজি,

ঘাটে নৌকা বাঁধা আছে



Wednesday, 29 July 2015

      বর্ষার কবিতা-12

সকাল হতেই বৃষ্টি পড়ে
আজকে সারা বেলা,
নদীপাড়ে বাঁধ ভেঙেছে,
লোকজনের মেলা

কোদাল হাতে কেউ আসে
কারো হাতে ঝুড়ি,
রুখতে হবে বাঁধকে আজি
তাইতো হুড়োহুড়ি

ছেলেবুড়ো সব এসেছে,
এসেছে পাড়ার ছেলে,
ঘাটের মাঝি সেও এসেছে
নৌকা বেঁধে কূলে

ঝুড়ি ঝুড়ি ফেলছে মাটি
ভাঙা বাঁধের উপর,
প্লাবন জলে ভেসে গেছে
গাঁয়ের মাটির ঘর

মেঘের পরে মেঘ জমেছে
আকাশ হয়েছে কালো
রিম ঝিম্ঝিম্ বৃষ্টি পড়ে,

জোরে বর্ষা নেমে এলো
 বর্ষার কবিতা-11

সকাল হতেই বৃষ্টি ঝরে
নদীতে আসে বান,
ছানি মাথায় কৃষাণবধু
মাঠে পুঁতে ধান

ঘাসের বোঝা মাথয় নিয়ে
বাতাসী বৌ আসে,
ছাগল দুটো তারই সাথে
চলছে পাশে পাশে

বেলা গেল সন্ধ্যা হল
ফুটল ঝিঙে ফুল,
নদীর ঘাটে নৌকা বাঁধা
শূণ্য নদীকূল

গোয়ালা পাড়ার পুকুরপাড়ে
ব্যাঙগুলো সব ডাকে,
পাহারদার লণ্ঠণ হাতে
জোর গলাতে হাঁকে

আকাশ কালো মেঘে ঢাকা
দেখি না চাঁদ তারা,
সারা রাতি বৃষ্টি পড়ে

ঘুমায় কিষাণ পাড়া



Thursday, 2 July 2015

    বর্ষার কবিতা

বর্ষা বাদল নামল ভারি,
পড়ছে ধ্বসে ঘরবাড়ি,
নদীতে কানায় কানায় বান,
... ... ... মাঝি হয়রান

নৌকা বুঝি যায় ডুবে,
কালো মেঘ জমেছে পূবে,
মাঝনদীতে এল তুফান,
... ... ... সাবধান! সাবধান!

নদীর পারে বটের গাছে,
পাখির বাসা হাওয়ায় নাচে,
মাটিতে পড়ে কাতরায়,
... ... ... পাখিদের ছানা

ঝমাঝম বৃষ্টি ঝরে,
কোথা যেন বাজ পড়ে,
প্রবল বৃষ্টিতে, বাইরে

... ... ...যেতে তাই মানা


Wednesday, 1 July 2015

                  বর্ষার কবিতা

গ্রীষ্মের দাবদাহে
প্রাণ বলিতে চাহে
কি দারুণ গরম সহ্য হয় না, সহ্য হয় না

তারপরে বৃষ্টি আসে,
নদী মাঠ জলে ভাসে,
বৃষ্টিতে ভিজে শালিক আর ময়না, কথা  কয় না

ঝম ঝমাঝম বৃষ্টি পড়ে,
কড় কড়াকড় বাজ পড়ে,
থেকে থেকে বিজলি চমকায়, আকাশের গায়

সকাল থেকে বৃষ্টি ঝরে,
ডাঙায় গোরু বাছুর চরে,

মেঘগুলো কেবলই গর্জায়, গর্জন শোনা যায়


                  বিধাতার খেলাঘর


খালি হাতে এসেছিলে ভবে,
খালি হাতে ফিরে যেতে হবে,
আমার আমার করে মিছেই কেন ভাবিস মন

দুদিনেরই আসা যাওয়া,
মিলেমিশে বসে খাওয়া,
ভবের খেলা সাঙ্গ হলে, মুদবি রে দু নয়ন

জীর্ণ বস্ত্র ফেলে যেমন
মানুষ নতুন বস্ত্র পরে,
দেহ ছেড়ে প্রাণ তেমনি
নতুন জীবন ধারণ করে

ভবের খেলা খেলতে এসে,
সবাই ফিরে যাবে শেষে,
পড়ে রবে তোর দালানকোঠা, সাধের বাড়িঘর

বিধাতার এই খেলাঘরে,
জনম মরণ খেলা করে,

জীবনতরী ডুববে একদিন, দুদিন আগে বা দুদিন পর



            আমি বাসরভাঙা বউ

দুঃখে ভরা জনম আমার
            দুঃখ বোঝে না কেউ,
বিয়ে হল, হল না বাসর,
             আমি বাসরভাঙা বউ

গর্ভে থাকতে মরলো পিতা,
             মা মরলো জনম দিয়ে,
বিয়ের রাতে মরলো স্বামী
              থাকবো কাকে নিয়ে?

বিধি কেন এমন পাষাণ,
             কেন হলো এত নিষ্ঠুর?
ভাঙলো আমার হাতের শাঁখা,
             মুছে দিল সিঁথির সিঁদুর

শ্মশানের জ্বলন্ত চিতায়
             দেহ পুড়ে হবে ছাই,
শ্মশানে হবে ফুলশষ্যা
              বাজবে সাঁঝের সানাই

দুঃখে ভরা জনম আমার
                দুঃখ বোঝে না কেউ,
বিয়ে হল, হল না বাসর,

                   আমি বাসরভাঙা বউ