Friday, 28 August 2015

     শরতের কবিতা-2

বৃষ্টি বাদল সবই গেছে থেমে,
আকাশখানি সাদা মেঘে ঢাকা
নদীর চরে নৌকা আছে বাঁধা,
খেয়াঘাটে মাঝির নাইকো দেখা

সাদা কাশ ফুলের বনে বনে,
শালিক পাখি বেড়ায় উড়ে উড়ে
বাতাসে বাতাসে পূজোর গন্ধ ভাসে,
খুশির আনন্দে চিত্ত ওঠে ভরে

ধানের খেতে সবুজের সমারোহ
খেতের আলে ছাগল ভেড়া চরে
গাঁয়ের ছেলে ডোবাতে ছিপ ফেলে,
বঁড়শি দিয়ে চ্যাং গড়ুই  ধরে।।

ভর দুপুরে কলসী কাঁখে নিয়ে,
গাঁয়ের বধূরা চান করতে যায়
গাছের ডালে বসে রাখাল ছেলে,
বাঁশের বাঁশি মিঠে সুরে বাজায়

দিনের শেষে পড়ে আসে বেলা,
দিগন্তে লাল সূর্য ডুবে যায়
পাখিরা সব কিচির মিচির করে,
দিনের শেষে ফেরে আপন বাসায়

ঢাকের শব্দে মেতে ওঠে গ্রাম,
কাঁসর ঘণ্টা বাজে মন্দির মাঝে
ধূপ দীপ জ্বলে সবার ঘরে ঘরে,

খুশির আনন্দে সাঁঝের সানাই বাজে





      শরতের কবিতা

ভোরের আলোয় ভরেছে আকাশ,
প্রভাত সূর্য গগনে ওঠে
নয়নদিঘির কালো ঘোলা জলে
শালুক ও পদ্ম ফোটে

শরতের সোনালী রোদ হাসে
বাড়ির ছাদ বারান্দায়
বাড়ির উঠোন সবুজ ঘাসে ভরা,
গঙ্গা ফড়িং উড়ে বেড়ায়

ধানের খেতে মিঠে হাওয়ায়,
পূজোর গন্ধ ভাসে
রাঙা মেঘে সাঁতার দিয়ে,
ধবল বলাকা আসে

ফকির ডাঙায় বনটিয়া এসে
শুঁয়োপোকা ধরে
কূলবধু জল আনিতে গেলে
লাজে যায় মরে

সন্ধ্যেবেলায় বিহগের দল
ফেরে আপন বাসায়
গাঁয়ের বধূ প্রতি সন্ধ্যায়

তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালায়







       বর্ষার শেষ কবিতা

বাড়ির উঠোন, জলে গেছে ভরে,
পথে ঘাটে কাদা জল
নদী মাঠ ঘাট জলে থৈ থৈ,
মেঘ ডাকে অবিরল

চণ্ডীতলার আটচালা ঘর,
ডুবে আছে হাঁটু জলে
কাগজের নৌকা ভাসায়ে তাতে,
খেলিছে সকল ছেলে

কালিমাখা মেঘে ছেয়েছে আকাশ,
কোথা যেন পড়ে বাজ
নামল বৃষ্টি জোরে মুষলধারায়
সকালবেলা হতে আজ

কচি ধান খেত জলে ভরা
তাল দিঘি গেছে ভরে
দিঘির মাঝে, ঘুনিজাল পেতে,
ছোটরা পোনা মাছ ধরে

বর্ষার মেঘ কেটে যাবে এবার,
তাই শরতের আনাগোনা
নদীধারে কাশফুলের বনে,

উড়িছে শালিক ময়না






     বর্ষার কবিতা-14

অম্বরে অম্বরে, বজ্র হুঙ্কারে,
গরজিছে কালো মেঘ
কালিমাখা মেঘে, হাসিছে বিজুলি,
বাড়িছে তুফানের বেগ

প্রলয় নাচনে, মেতেছে ভুবন,
দুর্যোগ ভরা বরষায়
দুকূল ছাপিয়ে, ধাবিছে তটিনী,
ঘর বাড়ি ভেসে যায়

প্লাবনের জলে, প্রকাণ্ড গাছ এক,
ভেসে যায় প্রবল বন্যায়,
প্রবল ঢেউয়ে, দুলিতেছে তরী,
মাঝিরা করে হায় হায়!

পথঘাট ভরে গেছে জলে,
মাঠ ঘাট জলে থৈ থৈ
মুষলধারে ঐ বৃষ্টি ঝরিছে,
উন্মুখ হয়ে চেয়ে রই

শান বাঁধানো পুকুরের ঘাট,
ডুবে গেছে বর্ষার জলে
দুর্যোগভরা বর্ষা মেতেছে,

আজি এই ধরার তলে






     বর্ষার কবিতা-15

শ্রাবণের মেঘে, বাদলের ধারা
ঝরিছে অঝোর ধারায়
অশনি মাখা, বিজুলির রেখা,
হাসিছে জলদের গায়

গুরু গম্ভীর, গরজিছে মেঘ,
পূব আকাশের কোণে
ঝম ঝমা ঝম্ বৃষ্টি পড়িছে,
চেয়ে দেখি বাতায়নে

কচি ধানখেত, জলে আছে ভরে,
শ্রাবণের বাদল নামে
নদী বাঁধ ভেঙ্গে, প্রবল বেগে,
ঘোলা জল ঢোকে গ্রামে

ঘাটের কাছে, বড় এক গাছে,
কত পাখি বাঁধে বাসা
শ্রাবণের ধারায়, ভেঙ্গে পড়ে নীড়,
মুছে যায় সব আশা

দুরন্ত বরষায়, নদীপাড় ভাঙ্গে,
নদীতে প্রবল বান
বাড়িঘর ভাসে, বন্যার জলে,

কেঁদে ওঠে সবার প্রাণ