অমল ও দইওয়ালা
“দই, দই ভালো দই!”
দইওয়ালা রোজ হাঁকে,
দইওয়ালার ভালো দই
মাটির ভাঁড়ে থাকে।
দধির বাঁক কাঁধে নিয়ে
সে ঘুরে পাড়াময়,
দইওয়ালাকে দেখে অমলের
দই খেতে সাধ হয়।
“দইওয়ালা!
ও দইওয়ালা!
বারেক ফিরে চাও,”
“দই কিনবে?
তবে কেন আমার
বেলা বইয়ে দাও?”
“কেমন করে কিনবো
দই,
আমার তো পয়সা নাই ”
অমলের কথা শুনে তার
পরাণ জুড়িয়ে যায়।
“দইওয়ালা!
ও দইওয়ালা! তুমি
আসছো কোথা থেকে?
তোমাদের গ্রাম সেই বুঝি
কি
শ্যামলী নদীর বাঁকে?
পাঁচমুড়ো পাহাড়ের তলায়
শ্যামলী নদীর ধারে,
তোমাদের গ্রামের ডাঙায়
কত
গরু বাছুর চরে।
মেয়েরা সব জল আনতে যায়
রাঙা শাড়ি পরে,
তোমাদের গ্রামে যেতে আমার
ভারি ইচ্ছে করে।
দধির বাঁক নামিয়ে মাটিতে
দইওয়ালা মোছে ঘাম,
“এক ভাঁড় দই খাও
বাছা তুমি
লাগবে না কোন দাম”
“ও দইওয়ালা!
তোমার সুরটা
শিখিয়ে দাও আমায়,
ভেসে আসা যে সুরে মন
উদাস হয়ে যায়।
কেমন সুরে তুমি বল
দই- দই ভালো দই!
তোমার সাথে সুর মেলাতে
পারি আমি কই?”
দইওয়ালা কয়- “হায় পোড়াকপাল!
এ সুর কি শেখাবার সুর?
“না দইওয়ালা,
ঐ সুর মেলায়
দূর হতে বহুদূর”।
“দই বেচতে যাবে
কেন বাবা,
কেনই বা দই বেচবে?
অত অত পুঁথি পড়ে তুমি
পণ্ডিত হয়ে উঠবে ”।
“না না দইওয়ালা,
আমি কখনও
পণ্ডিত হতে চাই না।
কল্পনার চোখে ভেসে ওঠে
মোর
ছোট্ট সেই গ্রামখানা।
দইওয়ালা কয় “সারাজীবন আমি
দই বেচে কি পেলাম?
দই বেচতে যে কত সুখ তা
তোমার কাছে শিখে নিলাম
।”